স্বদেশ ডেস্ক:
কয়েক সপ্তাহ ধরে বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মুরগি। এর মধ্যে হঠাৎ লাফিয়ে বাড়ল গরুর মাংসের দাম। দুদিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি দাম অন্তত ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ টাকায়। কোথাও কোথাও বিক্রি সর্বোচ্চ ৬০০ টাকায়ও।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ও মাংসের দোকান ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সামনে শবেবরাত থাকায় বাজারে মাংসের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। অন্যদিকে গরুর হাটেও দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যাপারীরা। যার প্রভাব পড়েছে রাজধানীর মাংসের বাজারে।
কারওয়ানবাজারের মাংসের দোকান মায়ের দোয়ার ব্যবসায়ী মো. জসিম জানান, গত সপ্তাহের শুরুর দিকেও ৫৫০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে। কিন্তু সপ্তাহের মাঝামাঝি ৫৬০-৫৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। গতকাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা থেকে দাম আরেক দফা বেড়েছে। আজ (শুক্রবার) বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ টাকা কেজি। অন্যদিকে খাসির মাংস ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা কেজি এবং ছাগির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, ২৯ মার্চ সারাদেশে পবিত্র শবেবরাত পালিত হবে। অর্থাৎ শবেবরাত আসতে এখনো অনেকটা সময় বাকি। অথচ এরই মধ্যে চড়তে শুরু করেছে সব ধরনের মাংসের দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সুযোগের ফায়দা লুটছেন ব্যাপারীরা।
মাংস ব্যবসায়ী জসিম বলেন, শবেবরাত উপলক্ষে মাংসের দোকানে ক্রেতা বেড়েছে। অথচ চাহিদার বিপরীতে বেশি দামে গরু কিনতে হচ্ছে আমাদের। গত ১০ দিনে হাটে অল্প অল্প করে গরুর দাম বাড়িয়েছেন ব্যাপারীরা। গরুর সংকট, পরিবহন চাঁদা, হাটের চাঁদা খরচ দেখিয়ে দাম বাড়ানো হয়েছে। যে দামে আমাদের গরু কিনতে হয়, তাতে কমে মাংস বিক্রি করার কোনো সুযোগই নেই।
রায়েরবাজারের মাংস ব্যবসায়ী মো. সুজন জানান, সপ্তাহের ব্যবধানে এ বাজারেও গরুর মাংসের দাম বেড়েছে। একদিনের ব্যবধানে গরুর মাংসের দাম কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ টাকায়। এলাকার ভেতর মাংস ভেদে ৬০০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, গত সপ্তাহের শুরুতেও ৫৬০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। কিন্তু এখন গরুর দাম বেড়ে গেছে।
মাংসের ব্যবসায়ী মো. রাসেল হোসেন বলেন, হাটে যে হারে গরুর দাম বাড়ছে, তাতে আমাদের কিছু করার নেই। আমাদেরও ব্যবসা করতে হবে। কেনা দামের কমে বিক্রি করে তো আর ব্যবসা হয় না।
এদিকে গত সপ্তাহের মতো চলতি সপ্তাহেও বয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। রাজধানীর বাজারে ব্রয়লার মুুরগির কেজি এখন ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা। অন্যদিকে সোনালি মুরগি ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া লাল লেয়ার মুরগির কেজি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৪৫০ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে রাজধানীর বাজারে পেঁয়াজের দাম আরেক দফা কমেছে। দেশি পেঁয়াজের কেজি এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, গত সপ্তাহেও যা বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা পর্যন্ত। অন্যদিকে আলুর দাম কেজিতে ২ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২২ টাকায়। গত সপ্তাহে ছিল ১৮ টাকা।
পেঁয়াজে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও চালের বাজার ভোগাচ্ছে ভোক্তাদের। বাজারে মিনিকেট ৬২ থেকে ৬৬ এবং বিআর-২৮ চাল ৫২ থেকে ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। নাজিরশাইল চাল মানভেদে ৬৫ থেকে ৬৮ টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৭ থেকে ৪৮ টাকা কেজি। কোথাও কোথাও এলাকার মুদিদোকানগুলোয় এসব চাল কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ তুলছেন, মিল মালিকরা সরকারের দাম মানছেন না। উল্টো হুটহাট দাম বস্তায় ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। এতে চালের দাম চড়া রয়েছে এখনো।